ভারত–এর প্রাকৃতিক পরিবেশ
অবস্থান ও প্রশাসনিক বিভাগ
- অবস্থান :-
♦ অক্ষ্যাংশগত অবস্থান :–
ভারত দক্ষিনে 8°4′ উত্তর অক্ষ্যাংশ (কন্যাকুমারিকা অন্তরীপ) থেকে উত্তরে 37°6′ উত্তর অক্ষ্যাংশ (কাশ্মীরের ইন্দিরা কল) পর্যন্ত বিস্তৃত । অক্ষ্যাংশগত ভাবে ভারত উত্তর গোলার্ধে অবস্থিত ।
♦ দ্রাঘিমাগত অবস্থান :–
ভারত পশ্চিমে 68°7′ পূর্ব দ্রাঘিমা (গুজরাটের গূহার মোটার ) থেকে 97°25′ পূর্ব দ্রাঘিমা (আরুনাচল প্রদেশের কিবিথু) পর্যন্ত বিস্তৃত । দ্রাঘিমাগত দিক থেকে পূর্ব গোলার্ধে অবস্থিত ।
- সীমানা :-
ভারতের উত্তরে হিমালয় পর্বত এবং চিন, নেপাল, ভূটান অবস্থিত । ভারতের পশ্চিমে পাকিস্তান ও আরব সাগর এবং দক্ষিনে রয়েছে শ্রীলঙ্কা ও ভারত মহাসাগর । পূর্বে মায়ান্মার,বাংলাদেশ এবং বঙ্গোপসাগর অবস্থিত । - উপদ্বীপ কাকে বলে ?
♦ উপদ্বীপ :-
তিনদিক জলভাগ দ্বারা বেষ্টিত স্থলভাগকে উপদ্বীপ বলে । যেমন- ভারত হলো একটি উপদ্বীপ, কারন ভারতের তিনদিকে রয়েছে 3 টি সাগর (পূর্বে বঙ্গোপসাগর, পশ্চিমে আরব সাগর এবং দক্ষিনে ভারত মহাসাগর) । ভারত পৃথিবীর বৃহত্তম উপদ্বীপ ।
- উপসাগর :–
তিনদিক স্থলভাগ দ্বারা বেষ্টিত জলভাগকে উপসাগর বলে । যেমন – খাম্বাত, কচ্ছ, উপসাগর ইত্যাদি । - ভারতের রাজ্যসমূহের পুনর্গঠনের প্রধান ভিত্তি কী ছিল ?
♦ ভারতের রাজ্য পুনর্গঠনের প্রধান ভিত্তি গুলি হল – i) ভাষা ii) সংস্কৃতি iii) প্রশাসনিক দক্ষতাবৃদ্ধি iv) অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা v) প্রাকিতিক ও ভৌগোলিক সাদৃশ্য ।
- বিস্তার :-
কাশ্মীর – কন্যাকুমারী উত্তর দক্ষিনে 3214 km এবং গুজরাট – আরুনাচল প্রদেশ পূর্ব –পশ্চিমে 2933 km বিস্তৃত । - SAARC( সার্ক) :-
South Asian Association for Regional Co-operation বা দক্ষিনে এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা পরিষদ ।
♦ স্থাপন :–
8 ডিসেম্বর 1985 সাল ।
♦ সদস্য দেশ :–
ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ । 8 টি দেশ মিলে এটি গঠিত হয় ।
♦ সদরদপ্তর :-
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু ।
- ভারতের প্রতিবেশী দেশ :–
9 টি । পাকিস্তান, আফগানিস্তান, চিন, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ । - ভারতীয় উপমহাদেশ :-
এশিয় মহাদেশের দক্ষিনাংশে ভারতসহ পাকিস্তান, নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ভূ-প্রাকৃতিক, জলবায়ু, আর্থ সামাজিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সাদৃশ্য দেখা যায় । 6 টি দেশের মধ্যে একেবারে মধ্যভাগে অবস্থিত ভারতের ক্ষেত্রে মান, জনসংখ্যা এবং প্রভাব প্রতিপত্তি সবচেয়ে বেশি । ভারত হল এই অঞ্চলটির মূল চালিকা শক্তি । তাই এই অঞ্চলটিকে ভারতীয় উপমহাদেশ বলা হয় । - ভারতের উল্লেখযোগ্য প্রনালী :-
প্রনালী | অবস্থান |
গ্রেট চ্যানেল | আন্দামান ও নিকোবর, ইন্দোনেশিয়া |
10 চ্যানেল | আন্দামান ও নিকোবর |
9 চ্যানেল | মিনিকয় ও লাক্ষাদ্বীপ |
8 চ্যানেল | মালদ্বীপ ও মিনিকয় |
মান্নার উপসাগর ও পক প্রণালী | ভারত ও শ্রীলংকা |
- ভারতের গুরুত্বপূর্ণ সীমানারেখা :–
সীমান্ত রেখা | কোন কোন দেশের মধ্যে অবস্থিত |
ম্যাকমোহন লাইন | অরুণাচল প্রদেশে – ভারত ও চিন |
র্যাডক্লিফ লাইন | ভারত ও পাকিস্তান |
LOC( Line of Control ) | ভারত – পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীর |
24 তম প্যরালাল | ভারত – পাকিস্তান (পাকিস্তান দাবি করে ) |
28 তম প্যরালাল | ভারতীয় কাশ্মীর – পাক অধিকৃত কাশ্মীর |
ডুরান্ড লাইন | ভারত ও আফগানিস্তান |
LAC (Line of Actual Control) | ভারত ও চিন অধিকৃত কাশ্মীর |
IB (International Border) | ভারত ও বাংলাদেশ |
- রাজ্য পুনর্গঠনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস :–
1957 | অসম থেকে নাগাল্যান্ড কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন । |
1960 | বোম্বাই ভেঙে মহারাষ্ট্র ও গুজরাট রাজ্য গঠন । |
1961 | গোয়া, দমন ও দিউ এবং পদুচেরী কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন । |
1964 | নাগাল্যান্ড রাজ্য গঠন । |
1966 | পাঞ্জাব ভেঙে হরিয়ানা রাজ্য ও চণ্ডীগড় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন । |
1969 | অসম থেকে মেঘালয় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন । |
1970 | হিমাচল প্রদেশ রাজ্য গঠন । |
1971 | ত্রিপুরা, মনিপুর ও মেঘালয় রাজ্য গঠন । |
1975 | সিকিম রাজ্য গঠন । (1976 ) মিজোরাম রাজ্য গঠন । |
1987 | অরুণাচল প্রদেশ ও গোয়া রাজ্য গঠন । |
1993 | দিল্লি জাতীয় রাজধানী গঠন । |
2000 | মধ্যপ্রদেশ ভেঙে ছত্তিসগড়, উত্তরপ্রদেশ ভেঙে উত্তরাখন্ড, বিহার ভেঙে ঝাড়খন্ড । |
2014 | অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে তেলেঙ্গানা রাজ্য গঠন । |
- গুরুত্বপূর্ন তথ্য :–
i) নবীনতম অঙ্গরাজ্য – তেলেঙ্গানা ।
ii) অঙ্গরাজ্যগুলির মধ্যে বৃহত্তম – a) আয়তনে – রাজস্থান, b) জনসংখ্যায় – উত্তরপ্রদেশ, c) জনঘনত্বে – বিহার ।
iii) অঙ্গরাজ্যগুলির মধ্যে ক্ষুদ্রতম – a) আয়তনে – গোয়া, b) জনসংখ্যায় – সিকিম, c) জনঘনত্বে – অরুনাচল প্রদেশ ।
iv) কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে বৃহত্তম – a) আয়তনে – জম্মু ও কাশ্মীর, b) জনসংখ্যায় ও জনঘনত্বে দিল্লি ।
v) কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির মধ্যে ক্ষুদ্রতম – a) আয়তনে ও জনসংখ্যায় – লাক্ষাদ্বীপ, b) জনঘনত্বে – আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ।
vi) ভারতের প্রধান ভাষাভিত্তিক রাজ্য – অন্ধ্রপ্রদেশ ।
- বর্তমানে ভারতে অঙ্গরাজ্য – 28 টি ।
- বর্তমানে ভারতে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল – 7 টি ।
- ভারতের প্রান্তবিন্দু –
i) ভারতের পশ্চিমতম প্রান্তবিন্দু হল – গুজরাটের গুহার মোটার (মোতি গ্রাম)।
ii) ভারতের পূর্বতম প্রান্তবিন্দু হল – আরুনাচল প্রদেশের কিবিথু।
iii) ভারতের উত্তরতম প্রান্তবিন্দু হল – জম্মু ও কাশ্মীর -এর পূর্বে কারাকোরাম পর্বত শ্রেণীর ইন্দিরা কল ।
iv) ভারতের দক্ষিনতম প্রান্তবিন্দু হল – আন্দামান ও নিকোবর দ্বিপপুঞ্জের ইন্দিরা পয়েন্ট ।
v) ভারতের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিনতম বিন্দু – তামিলনাড়ুর কন্যা-কুমারিকা অন্তরীপ ।
- ভারতের সর্ববৃহৎ প্রতিবেশী দেশ – চীন ।
- ভারতের সর্বাপেক্ষা ছোট প্রতিবেশী দেশ – মালদ্বীপ ।
- কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড় – ভারতে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যের রাজধানী ও চণ্ডীগড় এর রাজধানী । চণ্ডীগড় ভারতে 3 টি জায়গার রাজধানী ।
- আয়তনের বিচারে ভারতের পৃথিবীতে স্থান – সপ্তম ।
- ভারতের প্রামান্য দ্রাঘিমারেখা হল – 82°30′ পূর্ব ।
- ভারতের রাজ্য পূনর্গঠনের মুল ভিত্তি হল – ভাষা ।
- ভারতে রাজ্য পুনর্গঠন পরিষদের সুপারিশ প্রথম কার্যকরী হয় – 1956 সালে ।
- ভারতের প্রবেশ দ্বার বলা হয় – মুম্বাই কে ।
- ভারতে আর্ন্তজাতিক সিমারেখা সর্বাধিক – বাংলাদেশের সঙ্গে ।
- ভারতের সংবিধান স্বীকৃত ভাষা – 22 টি ।
- ভারতে রাজ্য পুনর্গঠন কমিশন তৈরি হয় – 1953 সালে ।
- ভারতের “মশলার বাগান নামে পরিচিত” – কেরল ।
- “এশিয়ার ডিমের ঝুড়ি“ নামে পরিচিত – অন্ধ্রপ্রদেশ ।
- “পঞ্চনদের দেশ” বলা হয় – পাঞ্জাব কে ।
- “আপেলের রাজ্য” বলা হয় – হিমাচল প্রদেশকে ।
- “ভারতের সুইজারল্যান্ড” বলা হয় – কাশ্মীর ।
- “ভূস্বর্গ” বলা হয় – কাশ্মীর কে ।
- কর্কটক্রান্তিরেখা (Tropic of Cancer) ভারতের যে রাজ্যের উপর দিয়ে গিয়েছে – গুজরাট, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা, মিজোরাম ।
- সর্বাধিক প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সীমা স্পর্শকারী রাজ্য –
♦ পশ্চিমবঙ্গ – নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ ।
♦ অরুনাচল প্রদেশ – ভুটান, চিন ও মায়ানমার ।
- ভারতের সবচেয়ে কম সীমানা স্পর্শকারী রাজ্য – সিকিম ।
- প্রনালী –
দুটি স্থলভাগ যে সংকীর্ণ জলভাগ দ্বারা বিচ্ছিন্ন থাকে তাকে প্রণালী বলে । যেমন –পক প্রনালী । - NFFA (North East Frontier Agency) উত্তর পূর্ব সীমান্ত অঞ্চল –
সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলি নিয়ে গঠিত অঞ্চল উত্তর পূর্ব ভারতের সিমান্তবর্তী রাজ্যগুলি নিয়ে গঠিত অঞ্চল উত্তর পূর্ব সীমান্ত অঞ্চল নামে পরিচিত । - করিডর (Corridor) –
দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক আলোচনার ভিত্তিতে যখন কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য একটি দেশের অভ্যন্তরে অন্যদেশকে তার এলাকা বিস্তারের সুযোগ দেওয়া হয় তাকে করিডর বলে ।