ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদ
- ভারতের সর্বাধিক বিস্তৃত অরণ্য অঞ্চল –
Ans. ক্রান্তীয় আর্দ্র পর্ণমোচী অরণ্য ।
- পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ অরণ্য –
Ans. পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন ।
- ভারতের সর্বাপেক্ষা অরণ্য আবৃত অঞ্চল –
Ans. উপদ্বীপীয় মালভূমি পাহাড় (57%) ।
- অরণ্য আচ্ছাদনে ভারতের প্রথম রাজ্য –
Ans. মধ্যপ্রদেশ ।
- চিরসবুজ গাছের নাম –
Ans. শিশু, গর্জন, তুন ।
- ভারতের সর্বাপেক্ষা কম অরণ্য সমৃদ্ধ রাজ্য –
Ans. পাঞ্জাব।
- পশ্চিমঘাট পর্বতের পশ্চিমঢালের অরণ্য –
Ans. চিরহরিৎ বা চিরসবুজ অরণ্য ।
- পর্ণমোচী বৃক্ষ –
Ans. শাল, সেগুন, পলাশ, শিশির, কুসুম, মহুয়া প্রভৃতি ।
- ভারতের প্রধান অরণ্য গবেষণা কেন্দ্র –
Ans. উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে (FRI – Forest Research Institute) ।
- ভারতের সামাজিক বনসৃজন গবেষণা কেন্দ্র –
Ans. উত্তরপ্রদেশের এলাহাবাদে ।
- বিশ্ব অরণ্য দিবস –
Ans. 21 শে মার্চ ।
- জাতীয় অরণ্য সপ্তাহ –
Ans. 8 – 14 জুলাই ।
- বিশ্ব পরিবেশ দিবস –
Ans. 5 জুন ।
- ভারতের বনভূমি সংরক্ষণ আইন –
Ans. 1980 খ্রিঃ ।
- ভারতের জাতীয় বননীতি –
Ans. 1952 খ্রিঃ ।
- ভারতের প্রথম বননীতি গৃহীত হয় –
Ans. 1894 সালেস।
- JFM–
Ans. Joint Forest Management. জনগণ, সরকার ও বেসরকারি সহোযোগিতায় অরণ্য সংরক্ষণকে JFM বলে ।
- সিলভি কালচার –
Ans. গাছের গুনগত মান বৃদ্ধি ও উন্নয়ন সংক্রান্ত বিজ্ঞানকে সিলভি কালচার বলে ।
- মেসোফাইট –
Ans. উষ্ণ – আর্দ্র জলবায়ুর বড়ো গাছ ।
- জেরোফাইট –
Ans. শুস্ক উষ্ণ অঞ্চলের কাঁটা জাতীয় উদ্ভিদ ।
- হ্যালোফাইট –
Ans. লবণাত্মক অঞ্চলের উদ্ভিদ ।
- ম্যানগ্রোভ জাতীয় উদ্ভিদ –
Ans. বদ্বীপ অঞ্চলে লবণাত্মক পরিবেশে জন্মানো উদ্ভিদ ।
- ঠেসমূল –
Ans. ম্যানগ্রোভ অরণ্যের কান্ডকে ধরে রাখার জন্য মূল ।
- শ্বাসমূল –
Ans. ম্যানগ্রোভ উদ্ভিদের শ্বাসকার্য চালানোর জন্য মূল ।
- অধিমূল –
Ans. কিছু উদ্ভিদের কাণ্ডের নিম্নাংশে চ্যাপ্টা তক্তার মতো অস্থানিক মূল বেরোয়, একে অধিমূল বলে ।
- শুস্ক পর্ণমোচী –
Ans. সাধারণত ঘাস, গুল্ম এবং ছোটো ছোটো পাতা ঝরা গাছকে একসঙ্গে বলে শুস্ক পর্ণমোচী ।
- ভারতের পর্ণমোচী অরণ্যের অপর নাম –
Ans. মৌসুমি অরণ্য ।
- সরলবর্গীয় উদ্ভিদ –
Ans. পাইন, ফার, দেবদারু ইত্যাদি ।
- আল্পীয় অরণ্যের বৃক্ষ –
Ans. জুনিপার, রডোডেনড্রন, নাকসভমিক্যা ।
- চিনি ও সিরাপ তৈরী হয় –
Ans. ম্যাপল গাছের রস থেকে ।
- স্বাভাবিক উদ্ভিদের নিয়ন্ত্রকগুলি –
Ans. ভূপ্রাকৃতিক, জলবায়ু ও মৃত্তিকা ।
- ভারতের শঙ্কু আকৃতির উদ্ভিদ –
Ans. সরলবর্গীয় এবং আল্পীয় অরণ্যের উদ্ভিদ ।
- ভারতের সাভানা অঞ্চল বলা হয় –
Ans. শুস্ক পর্ণমোচী অরণ্যেকে ।
- ভারতের সর্বপ্রথম বনমহোৎসব পালন করে –
Ans. ড: কানাইয়ালাল মানিকলাল মুনশি ।
- ভারতীয় অরণ্যের প্রথম শ্রেণিবিভাগ করেন –
Ans. আবহবিজ্ঞানী চ্যাম্পিয়ন ।
- উদ্ভিদ রেখা –
Ans. যে কাল্পনিক রেখার উপর কোনো গাছ জন্মায় না, তাকে উদ্ভিদ রেখা বলে ।
- স্বাভাবিক উদ্ভিদের প্রয়োজনীয়তাগুলি কী কী ?
Ans. স্বাভাবিক উদ্ভিদের প্রয়োজনীয়তাগুলি হল –
(i) বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেনের সমতা বজায় রাখে ।
(ii) ভূমিক্ষয় নিবারণ করে ।
(iii) মরুভূমির প্রসার রোধ করে ।
(iv) বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা বাড়ায় ।
(v) মোম, মধু, কাঠ ও ভেষজ দ্রব্য পাওয়া যায় ।
(vi) জীবজগতের ভারসাম্য বজায় রাখে ।
(vii) মৃত্তিকার উর্বরতা শক্তি বজায় রাখে ।
- স্বাভাবিক উদ্ভিদ কাকে বলে ?
Ans. যে সমস্ত গাছ বা উদ্ভিদ কোনো স্থানের জলবায়ু ও মৃত্তিকাসহ প্রাকৃতিক পরিবেশে মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই জন্মায় ও বড়ো হয়, তাদের ওই স্থানের স্বাভাবিক উদ্ভিদ বলা হয় ।
- ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদের শ্রেণিবিভাগ কর ।
Ans. ভারতের স্বাভাবিক উদ্ভিদকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয় । যথা –
(i) ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্য
(ii) ক্রান্তীয় পর্ণমোচী অরণ্য
(iii) ক্রান্তীয় মরু উদ্ভিদ
(iv) পার্বত্য উদ্ভিদ
(v) ম্যানগ্রোভ অরণ্য ।
- ক্রান্তীয় চিরহরিৎ অরণ্যের উদ্ভিদ চিরসবুজ কেন ?
Ans. চিরহরিৎ অরণ্য অঞ্চলের গাছের পাতা শুকনো ধাতুতেও ঝরে পড়ে না । বেশি বৃষ্টির জন্য মাটি সব সময় ভিজে থাকে বলে গাছের কখনও জলের অভাব হয় না । এই কারণে গাছ সবসময় সবুজ পাতাতে ভরে থাকায় গাছগুলি চিরসবুজ বা চিরহরিৎ ।
- সামাজিক বনসৃজন ও কৃষি বনসৃজনের মধ্যে পার্থক্য লেখ ?
Ans.
বিষয় |
সামাজিক বনসৃজন |
কৃষি বনসৃজন |
i) সংজ্ঞা | অরণ্য সীমার বাহিরে পতিত, পরিত্যক্ত, অনাবাদি জমিতে স্থানীয় স্বায়ত শাসিত সংস্থা, স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান এবং গ্রামীণ জনসাধারণের যৌথ বা একক প্রচেষ্টায় বৃক্ষ রোপনকে সামাজিক বনসৃজন বলে । | কৃষক দ্বারা তার নিজস্ব অধিকার ভুক্ত কৃষি জমি বা পতিত জমিতে কৃষিকাজের সঙ্গে কাঠ, সবুজ সার, ভেষজ দ্রব্য, ফলমূল আরোহনের জন্য বৃক্ষ রোপন করে বনসৃজন করাকে কৃষি বনসৃজন বলে । |
ii) উদ্যোগ | স্ব-শাসিত বা স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার উদ্যোগে চলে । | কৃষকের নিজস্ব উদ্দোগ্যে চলে । |
iii) জমি | মূলত সরকারি পতিত, অব্যবহৃত জমিতে এই বনসৃজন হয় । | কৃষকের নিজস্ব পতিত অব্যবহৃত জমিতে এই বনসৃজন হয় । |
iv) উদ্দেশ্য | গ্রামবাসীদের নানান চাহিদা পূরণের উদ্দেশ্যে এই বনসৃজন করা হয় । | কৃষকের ব্যাক্তিগত স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে এই বনসৃজন করা হয় । |
v) স্থান সমূহ | পতিত জমি, রেললাইন, ও সড়ক পথের দুপাশের জমি, নদী ও খালের পাড়, ধর্মস্থল, শিক্ষাক্ষেত্র, অফিস আদালতের উন্মুক্ত স্থান । | জমির আল বা বাঁধ, পতিত জমি, বাড়ির ফাঁকা স্থান, পুকুর পাড়, বাড়ির উঠোন, বাগান । |
vi) উদ্ভিদ | ইউক্যালিপটাস, আকাশমুনি, ক্যাসুরিনা, নিম, কাঠভুজ, করমচা, বাবুল, উতিস, সুবাবুল, ইত্যাদি । | সোনাঝুড়ি, নিম, কদম, শাল, শিশু, মেহগিনি, কলা, লেবু, কুল, কাঁঠাল, বাসক, নয়নতারা, ইত্যাদি । |
- অরণ্য সংরক্ষণ বলতে কী বোঝো ? এর পদ্ধতিগুলি কী কী ?
Ans. অরণ্য সংরক্ষণ :- অরণ্য সঠিকভাবে প্রয়োজনমতো বিজ্ঞান সম্মত ব্যাবহার করা, সুরক্ষিত রাখা, বৃক্ষ সৃজন করা, বনভূমির ক্ষেত্রমান বজায় রাখা ও বনভূমির পুনর্বীকরণ করাকে অরণ্য সংরক্ষন বলে ।
অরণ্য সংরক্ষণের পদ্ধতি :-
(i) অপরিণত বৃক্ষছেদন হ্রাস :- অপরিণত গাছ কাটার পরিবর্তে পরিণত গাছ কাটা উচিত । অপরিণত গাছ থেকে কম পরিমান কাঠ পাওয়া যায় ।
(ii) অনিয়ন্ত্রিত ভাবে বৃক্ষছেদন রোধ :- বর্তমানে জনসংখ্যার চাপ বৃদ্ধির জন্য খাদ্য ও বাসস্থানের জোগান, বিভিন্ন নির্মাণ, শিল্পস্থাপন ইত্যাদি নানা কারণে বৃক্ষছেদন করা হয় । এই বৃক্ষছেদন রোধ করতে হবে ।
(iii) দাবানল প্রতিরোধ :- মনুষ্য সৃষ্ট বা প্রাকৃতিক কারণে সৃষ্ট দাবানল থেকে বনভূমি রক্ষা করার জন্য শুকনো ডালপাতা, পাতা ও আগাছা নিয়মিত পরিষ্কার করা প্রয়োজন ।
(iv) কাঠের জ্বালানির পরিবর্তে বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি :- অনুন্নত ও দরিদ্র দেশে কাঠকে জ্বালানি রূপে ব্যবহার না করে. কাঠের পরিবর্তে বিকল্প জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে হবে ।
(v) বনসৃজন ও পূর্ণবনসৃজন :- বৃক্ষছেদনের পর সেই স্থানে এবং অন্যান্য পতিত জমিতে বিশেষ যে সব জমি চাষের পক্ষে অনুপযুক্ত সেই সব জমিতে বৃক্ষরোপন করে বনভূমি গড়ে তোলা দরকার ।